top of page
Search

নিঃস্বার্থ বলিদান

Updated: Mar 6


দূরের একপ্রান্তে প্রকৃতিক পরিবেশভরা গ্রামে একটা বড় পরিবার বসবাস করত সেই পরিবারের মুখ্যকর্তা এক বুদ্ধিমানি মা ছিলেন উনার নাম টেরা ছিল।উনার কয়েকজন ছেলে মেয়ের পর আর ও একটি পূএ সন্তানের জন্ম হয় তার নাম হোমো ছিল।সেই সন্তানটি যত বয়সের সাথে বড় হচ্ছিলো তার সাথে সাথে ওর বিশেষ বিশেষ বুদ্ধির গুণাবলিও প্রকাশিত হচ্ছিলো।

গ্রামের প্রধান মহিলা যিনি বুদ্ধিমানির সাথে বিশেষগুন সম্পন্ন চিন্তাধারার স্রষ্টা ছিলেন নামটি টেরা উনি বাকি গ্রামবাসীদের তুলনায় বিশেষ গুন সম্পন্ন ছিলেন বলে উনাকে গ্রামের মুখ্য মর্যাদা দিয়ে সেই গ্রামের কার্যভার নিয়ন্ত্রণ রক্ষার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল।

 

বুদ্ধিমানি প্রধান মহিলা টেরা শুধু গ্রামের কার্যভার নিয়ন্ত্রণ রক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না।তার সাথে সাথে উনার একটি বড় পরিবার ও ছিল যেখানে উনার নিজের কয়েকজন সন্তান,তাদের সঙ্গে কয়েকটি বিশেষ বিশেষ প্রজাতির প্রাণীগুলোর দেখাশোনা উনি করতেন খুব স্নেহ,যত্ন,ভালোবাসার মাধ্যমে।উনি সব সময় নিজেকে গ্রামের বিশেষ গুণাবলি সম্পন্ন মর্যাদাপ্রাপ্ত মহিলার চেয়ে একজন সাধারণ মা রূপেই নিজের পরিচয় দিতে বেশি ভালো বাসতেন।উনার মধ্যে যে সব বিশেষ গুণাবলি ছিল সেই সব গুনাবলি উনার সন্তানদের মধ্যে ও ছিল।সন্তানরাও বাড়ির সাথে সাথে গ্রামের ক্রিয়াকার্যকে সুপরিকল্পিত ভাবে কার্যকরি করার ক্ষেত্রে মায়ের সঙ্গেই কাজ করতেন।

             


একি পরিবারে একি বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও অন্য সন্তানদের মাঝে হোমো তার অসাধারণ ব্যক্তিত্বের পরিচয়ের ছাপ রেখেছিল।হোমোর মধ্যে যে বুদ্ধির বিশেষতা ছিল তার জন্য তাকে অন্য সন্তানদের চেয়ে আলাদা দৃষ্টি দিয়ে দেখার জন্য তার মা টেরাকে বাধ্য করে দিয়েছিল।শুধু যে তার মা তাকে আলাদা দৃষ্টিতে দেখতো তাই নয় তার মায়ের সাথে সাথে তার বিদ্যালয়ের ও গ্রামবাসির দৃষ্টিও তার প্রতি এক ধরনের মিল রাখতো।

 

হোমোর মা অন্য সন্তানদের চেয়ে বেশি হোমোর উপর খুবই গর্বিত বোধ করতেন।মায়ের সাথে সাথে তার ভাই,বোন,দাদা,দিদিরাও তার উপর খুবই গর্বিত বোধ করতেন।হোমোর পরিবারের সদস্যরা নিজের জন্য কিছু ভাবার আগে প্রথমে হোমোকেই বেশি প্রধান্য দিতেন।

হোমোর চাহিদা পূরণ করাটা ওদের কাছে প্রথমে প্রধান্য পেত তার পরেই ওরা ওদের জন্য কিছু ভাবতো।এই চিন্তাধারা মায়ের সাথে পরিবারের প্রত্যেক সদস্য থেকে শুরু করে গ্রামবাসী,কার্যক্ষেত্রের সদস্যগণ অব্দি হোমোর প্রতি এই একি মনোভাব রাখতো। 


সময়ের সাথে সাথে মা বুড়ি হয়ে গেলেন আর সন্তানরাও এখন বড় হয়ে গেছে।তারা সময়ের পরিবর্তিত হওয়া অভিজ্ঞতার মধ্যমে এখন এত বিচার করার মানসিক ক্ষমতা সম্পন্নে পৌঁছে গেছে যে এই সমাজে ভালো আর খারাপ দুইটি পথ রয়েছে তাকে নিজের সচেতন বুদ্ধি দিয়ে বিচার বিবেচনা করে নিজের জীবনে সঠিক ভালো পথকেই নিজের জীবনে সাথে জড়িত করে চলতে হবে বলে।

 

এদের মধ্যে সেই সবচেয়ে জ্ঞানী সন্তান হোমো ও সময়ের সাথে বড় হল তার সাথে সাথে তার জ্ঞানের বিকাশ আরও বিশেষ উন্নতমানের হতে লাগলো সব ক্ষেত্রগুলোতেই যেমন পড়াশোনা পথ থেকে শুরু করে তার কার্যক্ষেত্রের আধুনিক প্রযুক্তি করণের গবেষণার পর্যবেক্ষণগুলিতেও সে সব সময় সাফল্য লাভ করত।এই সাফল্যের জন্য সে কম বয়সেই তার গ্রামের সব চেয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর পদে উন্নিত হয়।হোমোর ভবিষ্যৎ সম্বন্ধিত চিন্তাধারার উচ্চবিচারগুলি সমাজের উচ্চশ্রেণীর ব্যক্তিগণ সব সময় তার বিচারকে মর্যাদাপূর্ণ ভাবে সম্মান করতেন।তার সাথে সাথে তার উচ্চ বিচারধারার দৃষ্টি পরিবর্তিত হওয়া সামাজিক পরিস্থিতির উপর ও ছিল।সে নতুনত্বের বিষয়ের গবেষণার দিকে এত বেশি গভীর চিন্তাধারার সাথে উৎসাহ আগ্রহ দিয়ে কাজ করতো যে তার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধিত অনুসন্ধানের মন্তব্যগুলি কোনো মতেই ভুল প্রমাণিত হত না।   


একদিন হটাৎ হোমোর গ্রামে একটি দুঃখ জনিত প্রলয়ের ঘটনা হয়।তার প্রভাব গ্রামবাসীর সাথে সাথে তার পরিবারের মধ্যে ও পড়ে তার ফলে পরিবারের একজন সদস্য তাদের মধ্যে রইল না।হোমো সেই সময় হঠাৎ এই ধরনের ঘটনা তার জীবনে প্রথমবার ঘটে যাওয়ার জন্য মনের দিক দিয়ে খুবই আঘাত পেয়ে কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে রয়ে পড়লো।তার পর কয়েক মাসের পর আবার নিজের দৈনন্দিন জীবনটা শুরু করতে লাগলো ও একদিন সে নিজের কর্মস্থানে গবেষণা করতে করতে নিজের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধেও গবেষণা করে পরিণাম হিসেবে বিচার করলো আর দেখলো যে ভবিষ্যতেতো এই গ্রামের সাথে আমার পরিবার যেমন আমার মা,আমার ভাই,বোন,দাদা,দিদি তাদের সাথে এই বাড়ি,গ্রাম এই গ্রামবাসি আর এই গ্রামের প্রকৃতিক পরিবেশ কেউ আমার সাথে চিরন্তকালের জন্য স্থির থাকবে না বলে।



হোমো সেই চিন্তাধারার কথা ভেবে স্থির হয়ে থাকতে পারলো না আর দিনের পর দিন নতুন নতুন যুক্তির সমাধানের মাধ্যমে হোমো এই পরিস্থিতির পর্যায়ে এসে পৌছালো যে সে নিজের গ্রাম,নিজের বাড়ি,নিজের পরিবার ছেড়ে দূরে নতুন এক জায়গায় গিয়ে নতুন এক পরিবেশ,নতুন বাড়ি,নতুন পরিবারের অনুসন্ধান করে নতুন ভাবে তার জিবনযাপন গড়ে তোলার চিন্তাধারা করতে শুরু করলো।

তার এই চিন্তাধারাকে বাস্তবে বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে কয়েকটি নতুন অনুসন্ধানের কাজের সময় কয়েকটি ত্রুটি বিচ্যুতিগুলোর জন্য তার পরিবারের সাথে সম্পূর্ণ গ্রামবাসীকে অনেক কিছু সমস্যা গুলি সহ্য করতে হত।তবুও তারা নিজের বুদ্ধিমানি সন্তান হোমোর উপর এত বেশি ভরসা করতো যে তার এই নতুন অনুসন্ধান সর্বকল্যাণের জন্য হতে পারে বলে তারা সেই কষ্ট চুপ করে সহ্য করে নিতো।

 


একদিন হঠাৎ আরও বড় ত্রুটি দেখা দেয় যার ফলে সম্পূর্ণ গ্রামবাসী,তার বাড়ি,তার মা,তার সাথে সাথে সমস্ত পরিবারকে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়।তার ফলে মা টেরা হোমোকে একটি ছোট প্রশ্ন শুধু করে যে এত অস্থির হয়ে অশান্ত ভাবে এইবারের নতুন অনুসন্ধানের কাজ কেনো করতেছো তুমি।তোমার মনে কী প্রশ্ন আছে যে তুমি এত অস্থির হয়ে অশান্ত ভাবে নিজের অনুসন্ধানের কাজ করতেছো তোমার মধ্যে এখন আগের মতন স্থিরতা কেন নেই।

 

উত্তরে সেই বুদ্ধিমানি সন্তান হোমো বললো যে আমি ভবিষ্যতের সুখশান্তির অনুসন্ধানে আছি যেখানে আমার অস্তিত্ব আমার সন্তান,সহকর্মীদের ভবিষ্যৎ স্থির থাকতে পারে।তার জন্য এত অশান্তি অস্থিরতা আছে আমার মধ্যে এখন।  

 

নিজের বুদ্ধিমানি সন্তান হোমোর মুখ দিয়ে এই উত্তর শোনার পর মা প্রথমে হতাশ হয়ে পড়েন।তার পর সন্তানকে বলেন যে,এই তো তোমার বাড়ি,আমি তোমার মা,এই তোমার ভাই,বোন,দাদা,দিদি এই সব তোমার গ্রামবাসী আর এই প্রাকৃতিক পরিবেশ তুমি কী এইখানে সুখ শান্তি অনুভব কর না।সবার সাথে মিলে মিশে একতার বন্ধনে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করার চিন্তাধারা কী তোমার মনের মধ্যে জাগে না।তুমি আমার সন্তানদের মধ্যে সব চেয়ে বুদ্ধিমানি সন্তান তুমি কী সবার সাথে সুরক্ষিত বোধ অনুভব কর না।যদি না ও করে থাকো তাহলে তোমার মধ্যে যে উন্নত বুদ্ধির বিশেষ গুন আছে তার মাধ্যমে তুমি কী সবাইকে একসাথে সুরক্ষিত রেখে নিজের আর নিজের পরিবার এই গ্রাম,গ্রামবাসির,প্রকৃতির সাথে এই প্রকৃতিক পরিবেশের সদস্যদের ভবিষ্যৎ এক হওয়া উচিত বলে তোমার মনের মধ্যে কী কোনো প্রশ্ন জাগেনা।আমি তোমার মধ্যে নিজের থেকেও বেশি বিশেষ গুনাবলির গুন দেখেছিলাম।আমি আমার পরে এই গ্রামের আর এই আমাদের পরিবারের সদস্যদের অস্তিত্ব সুরক্ষিত ভাবে বাঁচিয়ে রাখার স্বপ্ন তোমার মধ্যে দেখেছিলাম সেই স্বপ্নটা কী আমার ভুল স্বপ্ন ছিল বলে মা চুপ হয়ে গেলেন।

 

মায়ের এই সব কথা গুলোর পরে সেই বুদ্ধিমানি সন্তান হোমো একটাই কথা বললো যে,মা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের চিন্তা করা কী ভুল।আমি নিজের পক্ষ থেকে এই গ্রামকে সুরক্ষিত রাখার জন্য যা করার ছিল সব ধরণের প্রচেষ্টা করে দেখেছি আমি হয়তো এই গ্রামকে চিরন্তকালের জন্য সুরক্ষিত করে রাখতে পারবো না। আমি এত বছর পর্যন্ত নানা বিষয় নিয়ে গ্রামের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধিত গবেষণা করেছি আর গবেষণার পরিণাম আজ পর্যন্ত ভুল প্রমাণিত হয় নি।আর আজকে আমি নিজের অস্তিত্ব নিয়ে অনুসন্ধানের গবেষণা করতে চলেছি তো আজকে কী আমি ভুল হয়ে গেলাম।আমি আমার ভবিষ্যৎ অনুসন্ধান করে দেখেছি মা আমি পরিণাম হিসেবে ভবিষ্যতে বিলুপ্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া এই গ্রামের সাথে এই গ্রামে বসবাস করার ইচ্ছা রাখা গ্রামবাসীদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়াটা পেয়েছি।সেই অভিমতের উদাহারন হিসেবে আমি আমার আর আমার সন্তান,সহকর্মীদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হতে দিবো না মা।তার জন্য আমি এখন থেকেই ভবিষ্যতের উজ্জ্বল দিনের জন্য প্রস্তুত হয়ে কাজ করতেছি যাতে ভবিষ্যতে আমার আমার সন্তানদের আর আমার সহকর্মী অল্পসংখ্যকদের অস্তিত্ব বাঁজায় থাকে।হয়তো এর জন্য এক নতুন গ্রাম তার সাথে এক নতুন প্রকৃতি ও নতুন প্রকৃতিক পরিবেশের সদস্যগণ,নতুন এক বাড়ি,আর নতুন পরিবারের সদস্যরা আমাকে খুজে নিতে হবে এখন থেকেই এইখানে আপনাদের সাথে কয়েকদিন সঙ্গে থেকেই।

 

নিজের যে বুদ্ধিমানি সন্তান হোমোর ভরসায় এক মা নিজের,নিজের গ্রাম,এই প্রকৃতি ও এই প্রকৃতিক পরিবেশে বসবাস করে থাকা জীবজগতের সাথে নিজের গ্রামবাসী ও নিজের পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হয়ে আছে বলে সুনিশ্চিত ভাবে এখন বৃদ্ধ অবস্থায় পৌঁছে গিয়ে ছিলেন।সেই মা যখন জানতে পারেন যে তার বুদ্ধিমানি সন্তান এই বয়সে তার পাশে এসে বলে যে এইখানে সবার মাঝে তার ভবিষ্যৎ অসুরিক্ষিত সেই মা আর কী আশা রেখে তার হৃদয়হীন সন্তানের কাছে নিজের মন্তব্য রাখতে পারেন।

 

মা টেরা নিজের বুদ্ধিমানি সন্তান হোমোকে তবুও নিজের পরামর্শ একবার নিজের বুদ্ধিমানি সন্তান হোমোকে বোঝানোর চেষ্টা করে বলেন যে, বুদ্ধির দ্বারা বিকশিত হওয়া বিজ্ঞান প্রযুক্তির ক্ষমতার উপর এত ভরসা করে কাল্পনিক ভবিষ্যৎকে সুসজ্জিত করার স্বপ্ন দেখা ভালো।কিন্তু নিজের কাছে বুদ্ধির বল আছে বলে বিজ্ঞান প্রযুক্তির ক্ষমতার অহংকারে অন্ধ হয়ে নিজের জন্য যে কাল্পনিক ভবিষ্যৎ তৈরি হয় নি তার জন্য এত সুন্দর নিজের উজ্জ্বল বর্তমানকে নষ্ট করা কোনো মতেই উত্তম অনুসন্ধানিক গবেষণার পরিণাম হতে পারে না।

              

  “আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তক্ষনি সুনিশ্চিত হবে       

                    যখন আমাদের বর্তমান সুরক্ষিত থাকবে।”       

 

মা টেরা যিনি নিজের জীবন বৃদ্ধ অবস্থা অব্দি নিজের বুদ্ধিমানি সন্তান হোমোর উপর ভরসা করে নিজের,নিজের পরিবারের,এই গ্রামবাসী ও প্রকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা হয়ে আছে বলে নিজের জীবনের এক একটি দুঃখকে লুকিয়ে সব সময় নিজের বুদ্ধিমানি সন্তান হোমোকে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত করে নিশ্চিন্তে ছিলেন।সেই হোমো আজকে শুধু নিজের আর অল্পসংখ্যক সহকর্মীদের অস্তিত্ব বাঁচিয়ে রাখার জন্য উনাকে এত কষ্টের মধ্যে একলা ছেড়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় আছে সেই কথা আজকে উনি জানতে পেরে নিজের আশাহীন দুঃখিত হৃদয়ের সুরে নিজেকে সান্তনা দেওয়ার জন্য গান গাওয়া শুরু করেন যে,

“তোমাকে আমি কত দিন কত রাত আর কত বছর বাঁচিয়ে রাখতে পারবো বল জীবন।”           


11 views0 comments

Recent Posts

See All
Post: Blog2 Post
bottom of page